Thursday, March 13, 2025

বিভক্তির রাজনীতি নয়, ঐক্যের আহ্বান মির্জা ফখরুলের

আরও পড়ুন

আন্দোলন-সংগ্রামে যার যেটা কন্ট্রিবিউশন সেটা স্বীকার করতে হবে’ জানিয়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বিভক্তির রাজনীতি যেন আমরা না করি। এখন সবচেয়ে বেশি যেটা প্রয়োজন। দেশকে বাঁচানোর জন্য, গণতন্ত্রকে ফিরে পাওয়ার জন্য, সেটি হলো ‘ঐক্য’।

বৃহস্পতিবার (০৯ ডিসেম্বর) দুপুরে বিএনপির চেয়ারপারসনের গুলশানের রাজনৈতিক কার্যালয়ে ‘রাজবন্দীর জবানবন্দী’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।

চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ইসমাঈল জবিউল্লাহর সভাপতিত্বে ও কৃষকদলের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বাবুলের সঞ্চালনায় প্রধান আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিশিষ্ট সাংবাদিক শফিক রেহমান।

মির্জা ফখরুল বলেন, কী দুর্ভাগ্য আমাদের, হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর থেকে কেন জানি আমরা নিজেদের প্রতি বিশ্বাস ফিরিয়ে আনতে পারছি না। ঐক্যের জায়গাটাতে থাকতে পারছি না। কী দুর্ভাগ্য, এখন যেটা শুরু হয়েছে, এটা কিন্তু এতটুকু সুস্থ ব্যাপার না, একটা অসুস্থ প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে, ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য। ক্ষমতা তো তখনই টিকে থাকবে, যখন তুমি এটাকে সেটেল (স্থির) করতে পারবে, স্টেবিলিটি (স্থিতিশীলতা) আসবে।

আরও পড়ুনঃ  মহানবীকে (সা.) নিয়ে কটূক্তি রাতে রুয়েট শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

তিনি বলেন, সংস্কার তো আমরা শুরু করেছি। দেশে প্রথম সংস্কার করেছিলেন শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান, তিনি একদলীয় শাসনব্যবস্থা থেকে বহুদলীয় শাসনব্যবস্থা প্রবর্তন করেছিলেন।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, সংস্কার অবশ্যই লাগবে, সংস্কারে পেছনে যে শক্তিটা লাগবে- সেটা একটা হচ্ছে নির্বাচিত পার্লামেন্ট, নির্বাচিত সরকার। এটা ছাড়া সংস্কারকে লেজিটিমেসি (বৈধতা) দিতে পারব না আমরা। তাই আমরা সেসব বিতর্কে জড়াতে চাই না। আমরা বিতর্কে বেশি না জড়াই। আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, দেশের সমস্ত গণতন্ত্রকামী ও স্বাধীনতা দাবি মানুষদের তারা ঐক্যবদ্ধ থাকবে, বিভাজিত হবে না। সব পর্যায়ে রাজনৈতিক কর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, অনুরোধ করব, বিভাজন সৃষ্টি করবেন না।

আরও পড়ুনঃ  শিবিরকে ফাঁসাতে অস্ত্র হাতে ছাত্রদলকর্মীর কাণ্ড, ব্যর্থ হয়ে চাইলেন ক্ষমা

ফখরুল বলেন, আমি বুঝি না, কিছু মানুষ যেন ডেসপারেড (বেপরোয়া ) হয়ে গেছে। তারা দেশকে ভাগ করবে আবার জনগণকে বিভক্ত করবে। এমন বিভিন্ন রকম কথা বলছে, বিভিন্ন রকম উসকানি দিচ্ছে। আপনারা দয়া করে এগুলোর মধ্যে যাবেন না।

পাকিস্তানি সেনাবাহিনীদের হাতে গ্রেপ্তার হয়ে ৯ মাস কারাগারে ছিলেন এবং ১৬ ডিসেম্বর মুক্তি পান বেগম খালেদা জিয়া’ জানিয়ে তিনি বলেন, দেশের প্রথম নারী মুক্তিযোদ্ধা হচ্ছেন বেগম খালেদা জিয়া। যদি তিনি দেশের প্রথম নারী মুক্তিযোদ্ধা না হবেন, তাহলে কী হাসানুল হক ইনু, আমির হোসেন আমু মুক্তিযোদ্ধা? যারা কলকাতার ৮ নম্বর থিয়েটার রোডে বসে মুক্তিযুদ্ধ করেছেন- তারা?

তিনি বলেন, আজকে মিডিয়াও কেন জানি নেগেটিভ জিনিসগুলোতেগুলোকে তুলে ধরতে চায়, পজেটিভগুলোকে তুলে ধরার আহ্বান জানান তিনি।

আরও পড়ুনঃ  ঢামেকের মর্গে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ৬টি বেওয়ারিশ লাশের সন্ধান

মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান কিছুদিনের মধ্যেই কেস (মামলা) থেকে পুরোপুরি মুক্ত হবেন, তিনি তখন দেশে উপস্থিত হবেন।

বেগম খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসার জন্য লন্ডন যাওয়ার জন্য কাতারের আমিরের বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্স পাঠানোয় কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে মির্জা ফখরুল বলেন, কাতারের আমিরের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি তারা একেবারেই কোনোরকম পারিশ্রমিক ছাড়া অ্যাম্বুলেন্সে দিয়েছেন। ধন্যবাদ জানাই ব্রিটিশ সরকারকে তারা সেখানে যাওয়ার ব্যাপারটা নিশ্চিত করেছেন। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান সাহেবসহ যারা ওখানে রয়েছেন তারা ইতোমধ্যে চিকিৎসাব্যবস্থা শুরু করেছেন। গতকাল ম্যাডাম মুক্ত অবস্থায় তার চিকিৎসার জন্য লন্ডনে গিয়ে পৌঁছেছেন, এর থেকে আর এর থেকে বড় প্রাপ্তি আর কী আছে।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্বেচ্ছাসেবকবিষয়ক সম্পাদক মীর সরফত আলী সপু প্রমুখ।

আপনার মতামত লিখুনঃ

সর্বশেষ সংবাদ