Friday, March 14, 2025

৬ মাস আগে বিয়ে,নিহত স্বামীকে দেখতে গিয়ে মারধরের শিকার নববধূ

আরও পড়ুন

নাটোরের বড়াইগ্রামে মৃত স্বামীকে দেখতে গিয়ে মারধরের শিকার হয়েছেন এক নববধূসহ তার স্বজনরা। সোমবার (১৪ অক্টোবর) সন্ধ্যায় উপজেলার বাগডোব গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী গৃহবধূ নাটোর সদর উপজেলার হাজরা নাটোর এলাকার বাসিন্দা।

ভুক্তভোগীরা জানায়, প্রায় ছয় মাস আগে নাটোরের বড়াইগ্রামের প্রভাত কুমারের ছেলে জয়ন্ত কুমারের সঙ্গে নাটোর শহরতলী এলাকার শ্যামল চন্দ্রের মেয়ে শতাব্দী রাণীর বিয়ে হয়। বিয়ের পর শতাব্দী তার বাবার বাড়িতেই অবস্থান করছিল। গত শনিবার বিকেলে দুর্গাপূজা উপলক্ষে জয়ন্ত কুমার শ্বশুরবাড়িতে আসেন। পরে শতাব্দীকে নিয়ে পূজার কেনাকাটা করেন। রাতে জয়ন্ত বাড়ির বাইরে কোথাও গিয়ে মদপান করেন। এর কিছুক্ষণ পর তিনি শ্বশুরবাড়ি থেকে বাড়ি চলে যান।

আরও পড়ুনঃ  রাষ্ট্রীয় সম্মাননা ছাড়াই দাফন একু‌শে পদকপ্রাপ্ত মু‌ক্তি‌যোদ্ধার

পরদিন সকালে জয়ন্ত অসুস্থ বোধ করলে তাকে প্রথমে বড়াইগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পরে সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় জয়ন্তের জ্যাঠাতো ভাই মিলন তাকে এ্যাম্বুলেন্স ছাড়াই প্রাইভেট গাড়িতে নিয়ে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় জয়ন্ত মারা যান।

সেখানে ময়নাতদন্ত ও সকল আনুষ্ঠানিকতা শেষে সোমবার বিকেলে জয়ন্তের মরদেহ বাড়িতে নেয়া হয়। পরে সন্ধ্যার আগ মুহুর্তে জয়ন্তের স্ত্রী শতাব্দী রানী, তার বাবা শ্যামল চন্দ্র, মা রুপালী রাণীসহ তাদের ১০-১২ জন স্বজন মরদেহ দেখতে যান।

এসময় তাদের মরদেহ দেখতে না দিয়েই নিহত জয়ন্তের জ্যাঠাতো ভাই মিলনসহ বেশ কয়েকজন লাঠিসোটা নিয়ে তাদের ওপর চড়াও হন। এসময় নববধূসহ তাদের স্বজনদের এলোপাথাড়ি পিটিয়ে আহত করে তারা। খবর পেয়ে পুলিশ সবাইকে উদ্ধার করে। পরে তাদের সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে সেখানে তারা চিকিৎসাধীন আছেন।

আরও পড়ুনঃ  ‘চড়-থাপ্পড় দিতে পারত, কিন্তু রাস্তার মধ্যে আমার কাপড় খুলে ফেলে’

এ বিষয়ে শতাব্দী রাণীর অভিযোগ, জয়ন্তের জ্যাঠাতো ভাই মিলনই জয়ন্তের মৃত্যুর জন্য দায়ী। সে কেন মদপানে বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত একজন রোগীকে তড়িঘড়ি করে প্রাইভেট গাড়িতে রাজশাহী নিয়ে গেল? কেন তাকে মৃত স্বামীর মুখটা দেখতে না দিয়ে সবাইকে মারধর করলো? এমন প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়ে বিষয়টি সঠিক তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের শাস্তি চান তিনি। জয়ন্তের মৃত্যু ও মারধরের বিষয়ে মামলা করবেন বলেও জানান তিনি।

এ বিষয়ে মৃত জয়ন্তের জ্যাঠাতো ভাই মিলনের সঙ্গে যোগাযোগ করে মারপিধরের কারণ জানতে চাইলে তিনি জানান, পাবলিক উত্তেজিত হয়ে সবাইকে মারধর করেছে। আপনিও নিজে উপস্থিত থেকে মারধর করেছেন এমন কথা বলতেই মিলন উত্তেজিত হয়ে জানান, এ বিষয়ে কোনও কথা বলতে চাই না। পরে মোবাইল ফোনের সংযোগ কেটে দেন তিনি।

আরও পড়ুনঃ  টিউলিপের উচিত এখন দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়ানো: দ্য টাইমস

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ইমার্জেন্সী মেডিকেল অফিসার ডা. আল মাসুদ মো. মিজানুর রহমান বিষাক্ত মদপানে জয়ন্তের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

বড়াইগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সিরাজুল ইসলাম জানান, মারধরে আহতদের পুলিশ উদ্ধার করে নিরাপদে পৌঁছে দিয়েছে। এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। জয়ন্তের মৃত্যুর বিষয়ে একটি অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে।

আপনার মতামত লিখুনঃ

সর্বশেষ সংবাদ