Thursday, March 13, 2025

ধর্ষণ করার আগে মুখটা দেখে নিস, নয়ত বাসায় গিয়ে দেখবি ঐটা তোর বোন ছিল

আরও পড়ুন

ধর্ষণ একটি গভীর এবং জঘন্য অপরাধ, যা একদিকে সামাজিক, অন্যদিকে মানবিক ভাবে একেবারে অগ্রহণযোগ্য। এই ধরনের ঘটনা সমাজে যে নৈরাজ্য এবং অপরাধমূলক পরিবেশ তৈরি করছে, তা আমাদের সবার জন্য একটি বড় বিপদ। একদিকে, এটি শিকার ব্যক্তির জীবনের প্রতি ভয়াবহ প্রভাব ফেলে, অন্যদিকে, সমাজের জন্যও দীর্ঘমেয়াদী ক্ষতির কারণ হয়।

ডক্টর শ্রাবন্তী চট্টোপাধ্যায় নামের একজন অনলাইন একটিভিস্টের ২০১৮ সালের পোস্ট করা একটি ভিডিও সম্প্রীতিক সময় ভাইরাল হয়েছে। যেখানে দেখা যায় কয়েকটি যুবক একটি মেয়েকে ধর্ষণ করার জন্য রাস্তায় আটকে নিয়ে যাচ্ছিল। তখনই হঠাৎ চেহারা ঘুরিয়ে একজন দেখতে পেল এটি তার আপন ছোট বোন। তখন তারা প্রচন্ড লজ্জা এবং আত্মগ্লানিতে ভুগছিল। ভিডিওটির ক্যাপশন ছিলো: কাউকে ধর্ষণ করার আগে মুখের কাপড়টা সড়িয়ে নিস, নয়তো হয়ত বাসায় গিয়ে দেখবি ঐটা তোর বোন ছিল।

আরও পড়ুনঃ 

ধর্ষণ বা ধর্ষণের প্রভাব মোকাবেলা করার জন্য আমাদের কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সচেতনতা তৈরি করতে হবে। আমাদের সমাজে ধর্ষণ ও যৌন নির্যাতন বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে। মেয়েদের এবং ছেলেদের জন্য যৌন শিক্ষা অত্যন্ত জরুরি, যেন তারা বুঝতে পারে তাদের শরীরের সম্মান কীভাবে রক্ষা করা যায়।

ধর্ষণের মতো অপরাধের বিরুদ্ধে শূন্য সহিষ্ণুতা থাকতে হবে। আমাদের সংস্কৃতির মধ্যে যে ধরনের পুরুষতান্ত্রিক মানসিকতা রয়েছে, সেটি পরিবর্তন করতে হবে। পুরুষদের উপর চাপ তৈরি করতে হবে, যাতে তারা নারীদের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে শিখে।

ধর্ষণের শিকারদের জন্য দ্রুত এবং কার্যকর আইনি সহায়তা নিশ্চিত করা জরুরি। সমাজে আইনের প্রতি সম্মান ও বিশ্বাস বজায় রাখা অপরিহার্য। এক্ষেত্রে সরকার ও আদালতকে দ্রুত বিচার নিশ্চিত করতে হবে।

আরও পড়ুনঃ  মহানবীকে (সা.) নিয়ে কটূক্তি রাতে রুয়েট শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

পরিবারের সদস্যদের মধ্যে খোলামেলা আলোচনা এবং সুরক্ষিত পরিবেশ সৃষ্টি করা গুরুত্বপূর্ণ। এটি নিশ্চিত করতে হবে যে, কোনও শিশু বা যুবক/যুবতী পারিবারিক সুরক্ষায় থাকে এবং সে কোথাও কোনো ধরনের অনিরাপত্তা অনুভব না করে। ইসলামে পরিবারকে অত্যন্ত গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। পরিবার হলো সমাজের মূল ভিত্তি। যদি পরিবারে সঠিক নৈতিক শিক্ষা দেওয়া হয়, তবে ভবিষ্যতে ধর্ষণের মতো অপরাধ কমে আসবে। শিশুদের শালীনতা, সতীত্ব, এবং সম্মান শেখানো প্রয়োজন, যাতে তারা বড় হয়ে সমাজে ভালো আচরণ করতে পারে।

সোশ্যাল মিডিয়া এবং প্রযুক্তির মাধ্যমে সচেতনতা বৃদ্ধি করা গুরুত্বপূর্ণ। ধর্ষণ বা যৌন নিপীড়নের বিরুদ্ধে জনসাধারণকে সচেতন করতে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মগুলির ব্যবহার বাড়ানো উচিত। ধর্ষণের শিকারদের প্রতি সহানুভূতি এবং তাদের পুনর্বাসনের জন্য সমাজের সমর্থন প্রয়োজন। একজন শিকার যেন তার অভিজ্ঞতা মুখ খোলার মাধ্যমে কাউন্সেলিং এবং মানসিক সমর্থন পেতে পারে, এটি অত্যন্ত জরুরি।

আরও পড়ুনঃ  মধ্যরাতে এইচ টি ইমামের ছেলের বাসায় তল্লাশি

ধর্ষণের মতো অপরাধের বিরুদ্ধে লড়াই করতে হলে আমাদের সবারই সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে। সামাজিক পরিবর্তন ও আইনি সুরক্ষা একত্রে কাজ করলে আমরা এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে পারব। ধর্ষণ একটি মানবিক এবং ধর্মীয় অপরাধ, যা ইসলামী নৈতিকতা ও মূল্যবোধের বিরুদ্ধে। ইসলাম নারীকে সম্মান ও নিরাপত্তা দেয়, এবং এর শিক্ষা অনুসরণ করলে ধর্ষণের মতো অপরাধ প্রতিরোধ সম্ভব। আমাদের সমাজে ইসলামের শিক্ষাকে গুরুত্ব দিয়ে, শালীনতা ও সম্মানের পরিবেশ তৈরি করলে, এ ধরনের অপরাধ অনেকটা কমে আসবে। ধর্মীয় মূল্যবোধকে সঠিকভাবে অনুসরণ করলে, একটি নৈতিক ও সুস্থ সমাজ গড়ে ওঠবে।

আপনার মতামত লিখুনঃ

সর্বশেষ সংবাদ